IQNA

‘আমরা কি ধরনের পোশাক পরবো তা কোনো সরকার ঠিক করে দিতে পারে না’

19:16 - February 01, 2019
সংবাদ: 2607840
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং কুইবেক প্রদেশের বৃহত্তম শহর মন্ট্রিয়ালের মুসলিম নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে থাকেন। তাদের কেউ শিক্ষিকা,সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী অথবা পুলিশ অফিসার হয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে যে বিষয়টি সাধারণ তা হচ্ছে তারা সকলেই তাদের হিজাব নিয়ে গর্ববোধ করেন। তাদের সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা হয়ে থাকে কিন্তু সাধারণত কোনো আলোচনায় তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না।

বার্তা সংস্থা ইকনা: ৩৪ বছর বয়সী ফারিহা নাকভী মোহাম্মদ যিনি মন্ট্রিয়াল গেজেটের লাইফ স্টাইল বিষয়ক কলামিস্ট এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী:-

১৬ বছর বয়স থেকে তিনি হিজাব পরিধান করে থাকেন।

ফারিহা নাকভী মোহাম্মেদ বলেন, ‘আমি একটি খুব ধর্ম নিরপেক্ষ পরিবার থেকে এসেছি। সুতরাং আমি এমন পরিবারে বড় হয়েছি যারা আসলে অতোটা ধর্ম কর্ম করত না। আমার পরিবারের কেউই হিজাব পরিধান করত না এবং এখনো করেন না। কিন্তু আমি আমার ১৬ বছর বয়সেই আমার পরিবারের সদস্যদের জানাই যে, আমি হিজাব পরিধান করতে চাই। আমি যখন হিজাব পরিধান করা শুরু করি তখন এমনও দিন গেছে যখন আমার পরিবারের কেউই আমার সাথে কোনো কথা বলত না।

‘আমাকে আসলে হিজাব পরিধান করার জন্য অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হয়েছিল। তারা এটিকে অনগ্রসরদের কাজ বলে চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু আমার কাছে হিজাব নিজেকে ক্ষমতায়নের মত মনে হয়। আমি একজন শক্তিশালী নারীবাদী এবং এভাবেই আমি আমার নারীবাদ তুলে ধরি।’

‘হিজাবী নারীরা কখনো নারীবাদী হতে পারে না, এমনটি ভুল ধারণা। অনেকের এমন ভুল ধারণা ভেঙে দিয়েছি।’

‘আমি একজন গর্বিত নারীবাদী এবং আমি হিজাব পরিধান করি। নারীবাদ আসলে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে এবং তাদের নিজেদের পছন্দ অপছন্দের মূল্যায়নের কথা বলে। আমি কুইবেকে জন্ম নিয়েছি এবং বড় হয়েছি আর আমি কি ধরনের পোশাক পরিধান করবো সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আমার রয়েছে।’

‘আমি মনে করি আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একজন নারীর পছন্দ করার অধিকার থাকা উচিত। আর ২০১৮ সালে এসে কোনো নারী কি ধরনের পোশাক পরিধান করবে তা শুধুমাত্র তিনিই ঠিক করবেন।’

‘আমরা কি ধরনের পোশাক পরিধান করবো আর কি ধরনের পোশাক পরিধান করবো না তা কোনো সরকার ঠিক করে দিতে পারেন না।’

রাজনীতিবিদগণ এবং গণমাধ্যমগুলো মুসলিম নারীদের নিয়ে আলোচনা করেন কিন্তু তাদের নিজেদের নিয়ে নয়:

‘অন্যেরা আমাদের নিয়ে ঠিক কি ধরনের গল্প বলে আমি তা সংগ্রহ করতে চেষ্টা চালাই। তারা মুসলিম সমাজের নারীদের কি অনুভূতি হয় অথবা কি ধরনের অনুভূতি হয় না তা সম্পর্কে আলোচনা করে। আমি মনে করি এই ২০১৮ সালে আমরা এগুলোকে অতীতে ফেলে এসেছি, আর এখন সময় হয়েছে আমাদের কাছে মাইক্রোফোনটি হস্তান্তর করার। আমি কি অনুভব করি তা কখনো বলবে না, আমি কি অনুভব করি তা জিজ্ঞেস কর। আমি আমার নিজের গল্প বলতে চাই।’ মন্ট্রিয়ালগ্যাজেট ডট কম।

captcha