IQNA

আমেরিকার সঙ্গে কোনো ধরণের আলোচনা হবে না: সর্বোচ্চ নেতার সাফ জবাব

16:49 - May 30, 2019
সংবাদ: 2608636
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আবারো আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরণের আলোচনায় প্রথমত, এর মাধ্যমে কোনো ফল আসবে না এবং দ্বিতীয়ত এটি ক্ষতিকর।”

বার্তা সংস্থা ইকনা: বুধবার সন্ধ্যায় তেহরানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমেরিকার একটি কৌশল হচ্ছে এমনভাবে চাপ সৃষ্টি করা যাতে প্রতিপক্ষ এক পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং এরপর তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিজের ইচ্ছেগুলো আদায় করে নেয়া যায়। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, মার্কিন চাপ মোকাবেলার জন্য কিছু উপাদান বা সুযোগ সুবিধা আমাদের হাতে রয়েছে। তিনি সামরিক উপায়কে মার্কিনীদের বিরুদ্ধে পাল্টা চাপ সৃষ্টির একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের বিরোধিতা করার পাশাপাশি এও বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী এই হাতিয়ারও ব্যবহার করতে হবে।  খবর পার্সটুডে

ইরানের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টির কৌশল হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তারা বেশ কিছুদিন ধরে সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে আসছেন। গত বছরের ৮মে আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এ হুমকি বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক হামলার হুমকি দিয়ে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ইরানকে বাগে আনার জন্য তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে ইরানও পাল্টা হুমকি ও চাপ সৃষ্টি করে দেখিয়ে দিয়েছে তারা আমেরিকার পাতা ফাঁদে পা দেবে না। পরমাণু সমঝোতাকে কেন্দ্র করে ইরান আমেরিকার ওপর রাজনৈতিক চাপ অব্যাহত রেখেছে এবং এরই অংশ হিসেবে চুক্তিতে উল্লেখিত দুটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছে তেহরান। এ ঘোষণা দিয়ে ইরান ইউরোপকে দুই মাসের সময় বেধে দিয়েছে যাতে তারা পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে পারে। এর অন্যথায় ইরান ওই দুই প্রতিশ্রুতি ছাড়াও আরো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন থেকে সরে আসবে বলে আভাস দিয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা চুক্তির কয়েকটি প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "আমেরিকার ওপর পাল্টা চাপ সৃষ্টির জন্য আমরা যদি কোনো ব্যবস্থা না নেই তাহলে তারা ইরানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে। কিন্তু যদি আমরা সময়মতো ব্যবস্থা নেই তাহলে ওরা ওদের আচরণের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য হবে।"

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করার এবং পরমাণু সমঝোতায় ধরে রাখার জন্য তেহরানের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার নীতি নিয়েছেন। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াভকভ গতকাল (বুধবার) তেহরানে বলেছেন, আমেরিকা যদি ভেবে থাকে ইরানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা যাতে তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের ভারসাম্যপূর্ণ নীতি, বুদ্ধিমত্তা ও যৌক্তিক অবস্থান আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির কৌশলকে ভণ্ডুল করে দিয়েছে। ইরানের ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তাদের ক্ষণে ক্ষণে নীতি পরিবর্তন তাদের অসহায়ত্বকেই তুলে ধরেছে। ইরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত তবে কখনোই যুদ্ধের সূচনাকারী হবে না। iqna

captcha