বার্তা সংস্থা ইকনা: ডাবলিন শহরের পোর্টবেলো অঞ্চলের ১৫০-সিয়েটার ভেন্যু নামক স্থানের একটি হোটেল বিশ্ব হিজাব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আগত নারীদের ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে।
তাদের বেশির ভাগই রঙবেরঙের পোশাক যাকে স্থানীয় ভাষায় জিলবাবস বলা হয় এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ হিজাব পরিধান করে অনুষ্ঠানটিতে অংশ নিয়েছিলেন।
তবে তাদের কেউই নিকাব বা এমন পর্দা যা পুরো মুখমণ্ডল ঢেকে রাখে এমন হিজাব পরিধান করেননি আর এধরনের হিজাব আয়ারল্যান্ডে প্রচলিত নয়।
মুসলিমদের মধ্যে দুটো প্রধান ভাগ- যার একটি হচ্ছে সুন্নি মুসলিম আর অন্যটি শিয়া মুসলিম। যারা আয়ারল্যান্ড রিপাবলিকের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম বিশ্বাসী এবং ২০১৬ সালের এক আদম শুমারি অনুযায়ী দেশটিতে ৬৩,৪০০ হাজার মুসলিমের বসবাস।
বিশ্ব হিজাব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সকালের অনুষ্ঠানে মোট সাতজন বক্তা তাদের আলোচনা উপস্থাপন করেন। তাদের বেশির ভাগই ছিলেন হিজাব পরিধান করার মুসলিম নারী।
পাকিস্তান বংশোদ্ভূত একজন নারী চিকিৎসক ‘পর্দা পরিধান’ করার কারণে মুসলিম নারীদের জীবনের প্রত্যেক দিনের ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকসমূহ তুলে ধরেন।
গত ১৯ বছরে ডা. সাবিনা সাইয়্যেদ বেশ কিছু আইরিশ শহরে বসবাস করেছেন। তিনি বলেন, তিনি তার মাথা ঢেকে রাখে এমন পর্দা বা হিজাব পরিধান করাকে উপভোগ করেন। তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, হিজাব পরিধান করার অনুপ্রেরণা তিনি তার নিজের মনের গভীর থেকে পেয়েছেন তার স্বামী বা অন্য কারো থেকে নয়।
এর পরে মানাল এলরুফাই নামের একজন মুসলিম নারী যিনি ২০ বছর যাবত আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছেন। তিনি গর্ব করে একটি ক্যাথলিক বিদ্যালয় সম্পর্কে বলেন, যেখানে তার কন্যা অধ্যয়ন করে এবং সেখানে তার কন্যার হিজাব পরিধান করাকে গ্রহণ করে নেয়া হয়েছে।
তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, তিনি এমন অনেক বিদ্যালয়ের কথা শুনেছেন যেখানে মেয়ে শিক্ষার্থীদের হিজাব বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মানাল এলরুফাইর একজন মেয়ে তার বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে হিজাব সম্পর্কে উৎসাহী বক্তৃতা দিয়েছিল। আর তার অন্য আরেক মেয়ে সারা বাবিকার যিনি ট্রিনিটি কলেজে ইতিহাস এবং রাজনীতি নিয়ে অধ্যয়ন করেন, তিনি বিশ্ব হিজাব দিবসের অনুষ্ঠানে গোলাপি নিকাবের সাথে মিলিয়ে হিজাব পরিধান করে এসেছিলেন এবং সেখানে বক্তৃতা দিয়েছেন।
তিনি স্মৃতি চারণ করে বলেন, তার কলেজের বিতর্ক দল কর্তৃক মধ্যপ্রাচ্যের নারীদের সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং তিনি তাদের এসকল কর্মকাণ্ডের সমর্থন দান করেন। তিনি বলেন, প্রতিবাদীরা ভয় পাচ্ছে যে, এমন একটি সময় এধরনের বিতর্ক অনুষ্ঠান করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিতে পারে যখন তাদের একটি মধ্য পন্থা প্রয়োজন।
বিশ্ব হিজাব দিবসের সকালে ‘Muslim Sisters of Éire’ যাদের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে তারা প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যায় গৃহহীন মানুষদের জন্য স্যুপ পরিবেশনের উদ্যোগ নিয়েছেন। rte.ie