IQNA

ভারত থেকে রোহিঙ্গা পুশইনের চেষ্টা বিএসএফের: বিজিবি সতর্ক অবস্থায়

22:05 - October 15, 2017
সংবাদ: 2604074
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করছে। কিছু রোহিঙ্গা উখিয়ার আশ্রয় শিবিরে চলে গেলেও বাকিরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।

বার্তা সংস্থা ইকনা: বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে অক্টোবর মাসের মধ্যে তাদের কতুপালং শরণার্থী শিবিরে নেয়ার পাশাপাশি নতুন করে বসতি স্থাপনের জন্য আরো দু’হাজার একর জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে উখিয়ার কতুপালং এবং বালুখালী এলাকায় এক হাজার একর জায়গার ওপর বসতি এবং বাকি জায়গায় রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে।

ওদিকে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে বলে  জানিয়েছে বিজিবি।

তবে, বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে বার বার চেষ্টা করেও বিএসএফ সদস্যরা তাদের ঢুকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পদ্মশাকরা সীমান্ত দিয়ে ১০ শিশু, ছয় নারীসহ ১৯ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর তাদের আটক করে বিজিবি।

এদিকে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য কুতুপালংয়ে অনিবন্ধিত ক্যাম্পে কক্সবাজার ভিত্তিক এনজিও ‘মুক্তি’ ৭৬টি স্কুল খুলেছে। এসব স্কুলে বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিশুদের বার্মিজ বর্ণমালাও শেখানো হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেছেন, উখিয়ার কুতুপালং-এ নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ক্যাম্পে বেশ কিছু এনজিও শিক্ষার্থীদের বাংলা পড়াচ্ছে যা বেআইনি।

 আজ সকালে কুতুপালং ক্যাম্প ও তার আশেপাশের বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা  ডাক্তার  জাফরউল্লাহ  চৌধুরী রেডিও তেহরানকে বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের  যে বর্ণমালা শিক্ষার ব্যবস্থ্যা করা হয়েছে এটা একটি ভালো কাজ। এটা চালু থাকা উচিত।

এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে আজ ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমদ জাহিদ হামিদি।

তিনি আজ সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠক করেন।  আগামীকাল সকালেই কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন উপপ্রধানমন্ত্রী।

এ ছাড়া, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বিশেষ দূত পাঠাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দূত হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম শিগগির মস্কো যাচ্ছেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতার অধিকারী চীন ও রাশিয়ার কারণে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে দুই দফা আলোচনা হলেও পরিষদ কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূলে মিয়ানমার বাহিনী রাখাইনে বর্বর নির্যাতন চালাচ্ছে। এ নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় সোচ্চার হলেও রাশিয়া ও চীন এখনও মিয়ানমারের পক্ষেই রয়েছে।

মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেয়া হলেও বাংলাদেশ চাইছে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে তাদের নিজ নিজ বসতভিটায় ফিরে যাক। তাদের ফেরানোর প্রক্রিয়ায় বেইজিং ও মস্কোর যৌক্তিক ভূমিকা আশা করে ঢাকা।  পার্সটুডে
captcha